মুক্তিযুদ্ধের কেন্দ্রীয় বিষয় গণহত্যা ও নির্যাতন কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে আসেনি বিষয়টি। একাত্তরে এই জাতির ওপর চলা দুর্বিষহ গণহত্যা ও নির্যাতনের ইতিহাসকে সমার মাঝে ছড়িয়ে দিতে খুলনার সাউথ সেন্ট্রাল রোডে স্থাপিত হয় দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র গণহত্যা ও নির্যাতন বিষয়ক জাদুঘরটি। বিশেষায়িত এই জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে একাত্তরের গণহত্যা ও নির্যাতনের বহু নিদর্শন, ছবি ও নথিপত্র। সময়ের সাথে এই জাদুঘরের কলেবর বেড়েছে, বেড়েছে নথিপত্রের পরিমাণও। সাউথ সেন্ট্রাল রোডের ছোট দোতালা ভবনটিতে আর স্থানসংকুলন হচ্ছিল না। তাই সরকার এই ভবনটি ভেঙে জাদুঘরের জন্য ছয় তালা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই নির্মাণকালে গণহত্যা জাদুঘর স্থানান্তরিত হয়েছে ৪২৪, সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা (২য় ফেইজ), রোড নং- ৬, খুলনা, এই ঠিকানায়।
আজ ২০ জুলাই সকাল দশটা থেকে গণহত্যা জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের উপস্থিতিতে অস্থায়ী ঠিকানায় জাদুঘরের কার্যক্রম শুরু হয়।
জাদুঘর ঘুরে দেখা যায় দোতালা বাড়িটি জুড়ে রয়েছে অসংখ্য ছবি ও পেইন্টিংস।
প্রবেশের মুখেই দেখা যায় রায়েরবাজার বধ্যভূমির একটি প্রতীকীরূপ।
এরপর রিকশায় গণহত্যার একটি ভাস্কর্য এবং মায়ের কোলে গুলিবিদ্ধ শিশুর ছবি সংবলিত একটি ভাস্কর্য।
বিল্ডিং ঘরের ভেতরেই টিকেটঘর। টিকেটের মূল্য মাত্র ৫ টাকা।
টিকেটঘর পেরিয়ে নিচ তলায় রয়েছে দুটি গ্যালারি।
গ্যালারির দেয়ালে দেয়ালে গণহত্যার ছবি আর শোকেস জুড়ে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের নানারকম স্মারক।
নতুন যুক্ত হয়েছে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ডায়রি এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী গিয়াসউদ্দিন আহমেদের ব্যাবহৃত এবং সাক্ষরিত একটি গ্রন্থ।
গণহত্যা জাদুঘরের ডেপুটি কিউরেটর এবং গণহত্যা নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষনা কেন্দ্রের উপ-পরিচালক রোকনুজ্জামান বাবুল বাঙালীয়ানাকে জানান,
“সরকার গণহত্যা জাদুঘরের জন্য একটি অত্যাধুনিক ভবন নির্মাণ করে দিচ্ছে, খবরটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য আনন্দের। আমাদের জাদুঘরটি একটি বিশ্বমানের জাদুঘর। একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে এই জাদুঘর ভূমিকা রাখছে। সাথে সাথে একাত্তরে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী এই অঞ্চলে যে নির্মম গণহত্যা চালিয়েছে তার ইতিহাস বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
জাদুঘরের সময়সূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,
“জাদুঘরের সাপ্তাহিক বন্ধ সোমবার, আর শুক্রবার অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। অর্থাৎ শনি, রবি, মঙ্গল, বুধ এবং বৃহস্পতিবার জাদুঘর খোলা থাকবে বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আর শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।”
জাদুঘর ঘুরে এসে একটা কথাই বলা যায়, একাত্তরের গণহত্যার নির্মম ইতিহাস জানতে সবার একবারের জন্য হলেও খুলনায় ৪২৪, সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা (২য় ফেইজ), রোড নং- ৬ ঠিকানায় গণহত্যা জাদুঘর ঘুরে আসা উচিত
BY বাঙালীয়ানা ON